,

হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধ সম্মানী ভাতা হতে অর্থ দান করলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা

নিজস্ব প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধ সম্মানী ভাতা থেকে ১০ হাজার টাকার অনুদান দিলেন যুদ্ধাহত ফারিজা খাতুন নামের এক কুমারী মহিলা, শুধু তাই নয় একই সাথে প্রতিমাসে হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ২ হাজার টাকা করে অনুদান আজীবন দিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা করেছেন। এছাড়াও ফারিজা খাতুনের মৃত্যু পরবর্তী সময়ে প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে অনুদান দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করে গেছেন তার ছোট ভাইকে। এতক্ষণ যার কথা বল ছিলাম তিনি হলেন বানিয়াচং উপজেলার হলদারপুর গ্রামের বাসিন্দা ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীরা যে, নিরস্ত্র নিরীহ বাঙালিদের উপর আক্রমণ চালিয়েছিল সেই যুদ্ধে এক পা হারানো যুদ্ধহত নারী ফারিজা খাতুনের গল্প। তিনি মুক্তিযুদ্ধে পা হারানোর পর জীবদ্দশায় আর বিয়েও করেননি। সংসার পরিবার বলতে যা আছে এক দিনমজুর ও এক বেকার ভাইয়ের পরিবার। দুই ভাইয়ের অভাব অনটনের সংসারেই তার জীবন কাটছিল। পাচ্ছিলেন না মুক্তিযুদ্ধে পাহারানোর স্বীকৃতিটিও। অবশেষে ২০০৭ সালে মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা ভিত্তিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে হবিগঞ্জের অবদান সংগঠনটির পক্ষ থেকে কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরীর মেয়ে সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী আরো ৫ জন মহিলাকে খুজে বের করেন। তাদের মধ্য বীরাঙ্গনা ৫ জন যুদ্ধাহত। কেয়া চৌধুরীর আবেদনে বাংলাদেশ প্রথম ৫ বীরাঙ্গনা গেজেট ভূক্ত হোন। এদের মধ্যে যুদ্ধাহত ফারিজাও গেজেট ভুক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানীপ্রাপ্ত হচ্ছেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে তাদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তাদের নাম স্বীকৃতি হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা হয় এবং সার্টিফিকেট ও স্মার্ট কার্ড দেওয়া হয়। এরপর থেকে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন। শুরুর দিকে সম্মানী ভাতা কম থাকলেও এখন তিনি প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন। এই সম্মানী ভাতা থেকেই তিনি প্রথম এককালীন ১০ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার ১ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪ টার সময় হবিগঞ্জ মহিলা কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আব্দুজ জাহের এর সভাপতিত্বে হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে অনুদান ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যোদ্ধাহত ফারিয়া খাতুন, আরো উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ একরামুল ওয়াদুদ, সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চন্দ্র দাস গুপ্ত, হবিগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, এডভোকেট দীপেন্দ্র চন্দ্র দাস, অনুপ কুমার দেব মনা, ইন্সপেক্টর অজয় চন্দ্র দেব, শেখ ফজলে এলাহী, মুহাম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার, দৈনিক যুগান্তর ও একুশে টিভির হবিগঞ্জ প্রতিনিধি সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোখন, দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নুরুজ্জামান মানিক, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি এম এ রাজা প্রমুখ।


     এই বিভাগের আরো খবর